যশোরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় ২৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার প্রেস ক্লাব যশোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা বলেন, দীর্ঘ দিন যশোর শান্ত ছিল। এই শান্ত যশোরকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা কোনো রকম উসকানি ছাড়াই একের পর এক হামলা করছে। এমনকি দোয়া মাহফিলের মতো নীরব কর্মসূচিতেও হামলা করে নেতাকর্মীদের আহত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাবেরুল হক সাবু বলেন, গত ১৬ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে বেনাপোলে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এই দোয়া মাহফিল শুরুর কিছু সময় আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিএনপির ১১ জন নেতাকর্মী আহত হন। হামলার ঘটনা ঘটেছে শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নেও। এখানে আহত হয়েছেন পাঁচজন। সর্বশেষ, কেশবপুরে অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলে করে উপজেলা সদরে মহড়া দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বেধড়ক মারধর করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে বেনাপোল পৌর বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, ১৬ আগস্ট তারা মিলন চেয়ারম্যানের মার্কেটের দোতলায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। নিচে পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিল। ওইসময় অপু ও রাসেলের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ওইদিন আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুস সামাদ বিশ্বাস বলেন, সন্ত্রাসীরা প্রথমে মাছ বাজারে হামলা চালায়। এরপর ইউএনও অফিসের পাশের একটি চায়ের দোকানে হামলা করে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে বেধড়ক মারধর করে। তাকে শ্মশানে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। বিষয়টি কেশবপুরের ওসিকে জানালে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে শ্মশান থেকে সাইফুল ইসলামকে উদ্ধার করান। তার মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মদদে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেন আবদুস সামাদ বিশ্বাস।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, মানুষ দ্রব্যমূল্যসহ অন্যান্য সঙ্কট থেকে যখন মুক্তি চাচ্ছে। ঠিক সেই সময় আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দিচ্ছে। যশোরের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলা পূর্বপরিকল্পিত। তিনি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, কেন্দ্রীয় সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সদস্য, জাফর সাদিক, মারুফুল ইসলাম, আবদুস সালাম আজাদ, মিজানুর রহমান খান, আনিছুর রহমান মুকুল, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু ও আবদুস সামাদ বিশ্বাস।