যশোরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে দেড় হাজার ক্লাবফুট শিশু - যশোর নিউজ - Jessore News

Breaking

Post Top Ad


Post Top Ad

Responsive Ads Here

Friday, August 19, 2022

যশোরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে দেড় হাজার ক্লাবফুট শিশু

 


যশোরে ১৩ বছরে ক্লাবফুট (মুগুর পা) রোগে আক্রান্ত প্রায় দেড় হাজার শিশুকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছে ‘ওয়াক ফর লাইফ’ নামের একটি সংস্থা। দ্য গ্লেনকো ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘ওয়াক ফর লাইফ’ বিনামূল্যে এ চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। আগামী দুই বছরের জন্য স্যানক্রেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ‘ওয়াক ফর লাইফ’ ক্লাবফুট শিশুদের চিকিৎসায় নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। গতকাল এ প্রকল্পের পরিচিতি সভায় ‘যশোরকে ক্লাবফুট ফ্রি’ জেলায় পরিণত করার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রেস ক্লাব যশোরে অনুষ্ঠিত প্রকল্প পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান। ক্লাবফুট রোগের চিকিৎসা কার্যক্রম নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুর রউফ। বক্তব্য রাখেন যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহনেওয়াজ, যশোর সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আশিকুজ্জামান তুহিন, জেলা প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রকল্প প্রতিনিধি ও ফিজিওথেরাপিস্ট কাজী মুন ই মুল হুদা ও এডাব সহসভাপতি শাহজাহান নান্নু।

সভায় আয়োজকরা জানান, জন্মগত প্রতিবন্ধিতার মধ্যে অন্যতম ক্লাবফুট বা মুগুর পা। এমন পা নিয়ে জন্ম নেয়া শিশুদের পরিবার ও সমাজে গ্রহণযোগ্যতার জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হয়। প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার শিশু ক্লাবফুট নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। এ শিশুরা বিভিন্নভাবে অপচিকিৎসার শিকার হয়ে পরবর্তী সময়ে পঙ্গুত্ব নিয়ে জীবনযাপন করে। জন্মের পরপরই ধারাবাহিকভাবে যথাযথ চিকিৎসা করলে এ মুগুর পা সমস্যা ভালো হয়ে যায়।

যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুর রউফ বলেন, জন্মের পরপরই ক্লাবফুটে চিকিৎসা দিলে এসব শিশু স্বাভাবিক হয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে ‘ওয়াক ফর লাইফ’র সহযোগিতায় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ১৩ বছরে এখানে দেড় হাজার শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এর ৯০ ভাগের বেশি শিশু পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবন লাভ করেছে।

প্রকল্প প্রতিনিধি ও ফিজিওথেরাপিস্ট কাজী মুন ই মুল হুদা বলেন, প্রথমে জেলায় ক্লাবফুট বা মুগুর পা সম্পর্কে জানত না। কিন্তু এখন সামাজিকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় অনেক শিশুর পরিবার এ চিকিৎসা গ্রহণ করছে। এ প্রকল্পের আওতায় এখন যশোর রোটারি হেলথ সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ক্লাবফুট নিয়ে জন্মগ্রহণের পর থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত  ক্লাবফুটের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তবে জন্মের এক, দুই সপ্তাহের মধ্যে শিশুর চিকিৎসা শুরু করা হলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। আগে পুরোপুরি বিনামূল্যে এ সেবা দেয়া হলেও এখন নামমাত্র সেবামূল্য নেয়া হচ্ছে। তবে দরিদ্র রোগীদের জন্য এ চিকিৎসা বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হবে। যাতে শিশুর মুগুর পা নিয়ে অভিভাবক বাড়িতে বসে না থাকেন। এভাবে ‘যশোরকে ক্লাবফুট ফ্রি’ জেলায় পরিণত করার টার্গেট নেয়া হয়েছে।

Post Top Ad

Responsive Ads Here