যশোরের মনিরামপুরে এক চা বিক্রেতার স্ত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সাবেক এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যর নাম জাকির হোসেন। তিনি উপজেলার ভোজগাতী ইউনিয়নের মোল্লাডাঙা গ্রামের চান্দার আলীর ছেলে। তিনি ভোজগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চার নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
এ ঘটনায় শনিবার (১৩ আগস্ট) গৃহবধূর স্বামী মনিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অসুস্থ গৃহবধূ যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ বলেন, ‘৪ মাস আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। বেগারীতলা বাজারে আমার স্বামীর চা দোকান। আমরা দুজনে দোকানদারি করি। আমাদের দোকানের বিপরীতে জাকিরের কাঠগোলা। দেড় মাস আগ থেকে জাকির নিয়মিত চা খাওয়ার নাম করে দোকানে এসে আমাকে কু-প্রস্তাব দিতেন। তার কথায় রাজি না হলে দোকান পুড়িয়ে দেওয়াসহ আমার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেন।’
তিনি বলেন, ‘গত রোববার (৭ আগস্ট) বিকেলে বাড়ি থেকে দোকানে আসার সময় জাকির আমার গতিরোধ করে নাকমুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে আমাকে তুলে নেন। এরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’
গৃহবধূ বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে জ্ঞান ফিরলে জাকিরকে পাশে দেখে অজানা স্থান বুঝতে পেরে আমি চিৎকার দিই। এরপর রাতভর আমাকে নির্যাতন করে মেম্বর। ভোর চারটার দিকে বাইরে থেকে লোকজনের আওয়াজ পেয়ে মেম্বার পালিয়ে যান।’
গৃহবধূ বলেন, ‘লোকজন আসলে আমি জানতে পারি যশোর শহরের লালদিঘীর পাড়ে ১০ তলা একটি ভবনের ৬ তলায় আমি। পরে আমার বোন ও মায়ের সাহায্যে সোমবার (৮ আগস্ট) আমি বেগারীতলায় পৌঁছে ঘটনা খুলে বললে স্থানীয়রা আমার কথা বিশ্বাস করেননি। পরে ঘটনা ভিন্নদিকে নিতে জাকির ও তার লোকজন গত মঙ্গলবার দুপুরে আমাকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।’
গৃহবধূর অভিযোগ, জাকির ও তার লোকজন ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, কদিন আগের ঘটনা হলেও জাকিরের ভয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। জাকিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলায় গত শুক্রবার সকালে তার লোকজন বেগারীতলা বাঁশের হাটে আমাকে মারধর করেন।
চা বিক্রেতা বলেন, অবশেষে আজ শনিবার মনিরামপুর থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ লিখিত অভিযোগ নিয়েছে।
জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, কদিন আগে আমার এক প্রতিবন্ধী শ্রমিকের ওপর চড়াও হয় চা দোকানদার। আমি তখন তাকে বকাঝকা করলে রাতে সে আমাকে মোবাইলে ধর্ষণ মামলা সাজানোর হুমকি দেয়।’
জাকির বলেন, এই চা বিক্রেতার বর্তমানে ৮ নম্বর স্ত্রী ঘরে। এর আগেও স্ত্রীদের সঙ্গে জড়িয়ে সে এলাকায় অনেককে ফাঁসিয়েছে। তার বর্তমান স্ত্রীরও ৪ নম্বর স্বামী এই চা বিক্রেতা।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। শুনেছি, অভিযোগ দিয়েছে। আমি এখনো হাতে পাইনি। অভিযোগের কপি পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।