করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ফল নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার সাত ব্যক্তি। গতকাল শুক্রবার ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে জানানো হয়, নমুনা পরীক্ষায় তাদের দেহে ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এর আগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দফা পরীক্ষায় তাদের দেহে ভাইরাসটি পাওয়া যায়। এ নিয়ে ওই ব্যক্তি ও তাদের স্বজনরা এখন চরম উদ্বিগ্ন।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রথম দফায় গত ২৫ এপ্রিল শৈলকুপার পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পাঠানো হয়। পরদিন সেখান থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের দেহে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। একইদিন উপজেলার আরও দুই ব্যক্তির নমুনা যশোরে পাঠানো হয়। পরে ২৭ এপ্রিল ওই দুজনেরও পজিটিভ প্রতিবেদন আসে। এরপর তাদের কয়েকজনের মধ্যে কোনো উপসর্গ না থাকায় আবারও নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। গতকাল সেখান থেকে সাতজনেরই নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, ‘দুই ল্যাব থেকে দুই ধরনের রিপোর্ট আসার সঠিক কারণ বলা যাবে না। নমুনা সংগ্রহ, পরিবহন কিংবা টেস্টের সময় সমস্যা হতে পারে। আমরা তৃতীয় দফায় তাদের নমুনা পাঠাচ্ছি। এর ফলাফল পেলে বিষয়টি জানা যাবে।’
এদিকে দুদিনের ব্যবধানে সংগ্রহ করা নমুনায় ফল পাল্টে যাওয়ায় দ্বিধায় পড়েছেন ওই সাতজন। তাদের একজন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেস্ট করলে সেখান থেকে পজিটিভ ফল আসে। আবার ঢাকায় আইইডিসিআর টেস্ট করে বলেছে, করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। ঢাকা ও যশোরের রিপোর্ট নিয়ে খুব সমস্যায় আছি।’
সিভিল সার্জনের কার্যালয় জানিয়েছে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো প্রতিবেদন অনুসারে এখন পর্যন্ত জেলায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৩৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরে তাদের নমুনা ঢাকায় পাঠানো হলে ১৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
দুই ল্যাবে দুই রকম ফল আসা নিয়ে শঙ্কিত হরিণাকুন্ডু উপজেলার এক ব্যক্তি বলেন, ‘করোনার রিপোর্ট যখন পজিটিভ এসেছিল তখন গ্রামের মানুষ আমিসহ আমার পরিবারকে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। সমাজের কাছে আমরা অনেক ছোট হয়ে গেছি। কোনটা (প্রতিবেদন) সঠিক আর কোনটা বেঠিক তা কী করে বুঝব!’