নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সারা দেশে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন চলাচল। এজন্য যশোরের বিভিন্ন বাস টার্মিনালে আটকা পড়েছেন প্রায় ২০০ পরিবহন শ্রমিক। একদিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ, অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি সহায়তাও ঠিকমতো জুটছে না তাদের কপালে। এতে চরম কষ্টে দিন কাটছে তাদের।
তবে যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, আটকে থাকা পরিবহন শ্রমিকদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়াসহ এখানে অবস্থানকালে তাদের খাবার নিশ্চিতের জন্য পরিবহন মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি জানার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর থেকে ঢাকা, বেনাপোল, খাজুরা, ছুটিপুর, মাগুরা, নড়াইলসহ ৩২টি রুটে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ গাড়ি চলাচল করে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন আড়াই হাজার শ্রমিক এবং তাদের পরিবার।
তাদের একমাত্র অবলম্বন রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে বেঁচে থাকা। গাড়ি চলাচল বন্ধের ঘোষণায় এদের মধ্যে অনেকেই আটকা পড়েছেন যশোরের বিভিন্ন বাস টার্মিনালে।
শ্রমিকরা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘরে থাকতে বলেছে, যাতে মানুষের মাঝে না ছড়ায়। কিন্তু আমরা দিন আনি দিন খাই, পরিবারের একজনের আয়েই সংসার চলে। আমরা যদি দুদিন ঘরে বসে থাকি, তিনদিনের মাথায় আমাদের খাবার জুটে না।
সাইফুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক বলেন, যাত্রীদের পৌঁছে দিতে আমরা দায়িত্ব পালন করি। অথচ দেশের এ পরিস্থিতিতে আমাদেরই আটকে থাকতে হচ্ছে পরিবার ছেড়ে। এদিকে কারো নজর নেই।
রাজু শেখ নামে যশোরে আটকে থাকা আরেক শ্রমিক বলেন, গাড়ির চাকা ঘুরলে আমাদের পেট চলে। এবার গাড়ি বন্ধ থাকায় পেট তো চলছেই না, আমাদের এই আটকদশা থেকে মুক্তিরও কোনো উপায় দেখছি না।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু বলেন, বিভিন্ন স্থানে সরকারি সাহায্য দেয়া হলেও তা জুটছে না পরিবহন শ্রমিকদের। এখানে অনেক শ্রমিক আছেন, যারা বাড়ি ফিরে যেতে না পেরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।