উৎসব, অনুষ্ঠান মানেই ফুলের প্রয়োজন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সব ধরনের উৎসব-অনুষ্ঠান বন্ধ। তাই ক্ষেতের ফুল ক্ষেতেই পচে শুকিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফুল ব্যবসায়ী ও চাষিরা। সারা বছরে কয়েকটি অনুষ্ঠানকে ঘিরেই চাষিরা ফুল বিক্রি করে থাকেন। সেই সব অনুষ্ঠানের মধ্যে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ছিল। দিবসটিতে কোটি কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে।
কিন্তু এবার দিবসটিতে কোনো অনুষ্ঠান না হওয়ায় ফুল বেচাকেনাও হয়নি। সামনে পহেলা বৈশাখ। কিন্তু এ দিনটিও আনুষ্ঠানিকভাবে পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি মৌসুমের এই দুটি দিবসকে ঘিরে কৃষকের প্রায় ২৫০ কোটি টাকার লোকসান হবে। গত অর্থবছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও কিছু কিছু ফুল রপ্তানি হয়। বর্তমানে ফুল উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ফুলের খুচরা ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ জড়িত। এ অবস্থায় তারাও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।
যশোরের ফুল চাষি লিয়াকত আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দুটি ব্যাংক ও একটি এনজিও থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়ে এবার আমি সাত বিঘা জমিতে বিভিন্ন রকমের ফুল চাষ করেছি। কিন্তু দেশের সব অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ায় ফুল ব্যবসায়ীরা ফুল কিনছেন না। এখন ক্ষেতের মধ্যেই ফুল পচে পচে শুকিয়ে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘প্রতিদিন ফুল কেটে বাজারজাত করতে হয়, না হলে জমিতে নষ্ট হয়। গত ১৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ফুল চাষিরা কোনো ফুল বিক্রি করতে পারেনি। এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষকে কেন্দ্র করে চাষিরা বেশি ফুল চাষ করেছিল। কিন্তু করোনার কারণে বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করতে না পারায় ফুল চাষিরা ও বিক্রেতারা ক্ষতির মুখে পড়ে।