করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া শত শত নারী-পুরুষ ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। রবিবার বিকালে উপজেলার সুন্দলপুর, আগরহাটি, পাড়দিয়া, গাংড়া, মহাদেবপুর, দোলখোলা, মোহনপুর ও জয়পুর গ্রাম থেকে দুই শতাধিক মানুষ মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থান নেন। তবে ত্রাণ পাওয়ার আশায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাদের।
উপজেলার শ্যামকুড় ইউপির আগরহাটি গ্রামের আখিরা বেগম বলেন, ‘সংসারে ৭-৮ জন লোক। ভিক্ষা করে সংসার চলতো। এখন কেউ ভিক্ষা দেয় না। না খেয়ে আছি। খবর পেয়ে এখানে আইছি। কিছুই পাইনি।’ সুন্দলপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি পরিবহন শ্রমিক। একমাস ধরে আমাদের বলা হচ্ছে, গাড়ি বন্ধ রাখতে, খাবার নাকি বাড়ি পৌঁছে যাবে। আজ পর্যন্ত কিছুই পাইনি।’
ওই গ্রামের আরেক শ্রমিক হারুন বলেন, ‘সকালে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি দাঁড় করিয়েছিলাম। তারা আমাদের বলেছেন, উপজেলায় আসতে। এখানে আসার পর আমাদের খেলার মাঠে নিয়ে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে নাম লিখিয়েছে। পরে ইউএনও অফিসে তালা দিয়ে বেরিয়ে গেছে। আমাদের কিছু দেয়নি।’ তবে, ফিরে যাওয়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, ‘ওদের আন্দোলন সঠিক। আমার ইউনিয়নে ৫ হাজার ৭০০ লোক ভিজিডি পান। তাছাড়া আরও অনেকে এখন কাজ হারিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। আমি সরকারিভাবে ইতিমধ্যে প্রতি ওয়ার্ডে ২-৩টি করে মোট ৪০টি খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছি।’
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, ইতিমধ্যে ১৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরো ১৯ টন বিতরণ করা হবে। তাছাড়া আমরা হেল্প লাইন খুলেছি। যারা খাবার চেয়ে ফোন করছেন, তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছি। রবিবার যারা উপজেলায় এসেছেন তাদের তালিকা করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে।
সূত্র-ইউএনবি