যশোরে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে কর্মহীন দরিদ্র মানুষেরা। আজ শনিবার(২৫ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ করেন তারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সেনাসদস্যরা ত্রাণের আশ্বাস দিয়ে তাদের ঘরে ফেরান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় মানুষ ঘরের বাইরে চলে আসছে।
যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের নদীপাড়ের বাসিন্দারা ত্রাণ না পেয়ে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় বিক্ষোভকারী রাস্তায় বসে ও শুয়ে পড়েন।
শাহানা নামে একজন বিক্ষোভকারী অভিযোগ করেন, এক মাস ধরে কর্মহীন হয়ে ঘরে রয়েছেন। সরকার থেকে ত্রাণের ঘোষণা দেয়া হলেও তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। স্থানীয় মেম্বারের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও কোন লাভ হয়নি। তারা জানিয়েছে বরাদ্দ পেলে দেয়া হবে। ফলে ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে আজ তারা রাজপথে নেমে এসেছেন। কিন্তু পুলিশ এসে তাদের প্রতি সহমর্মিতা না দেখিয়ে উল্টো লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাসেল হোসেন নামে একজন জানান, রোজা রেখেছি। ঘরে খাবার নেই বলে রাস্তায় এসেছি যাতে প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারে। পুলিশকেও ফোন দিয়ে জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ এসে উল্টো আমাদের মারপিট করেছে। পুলিশ কি এভাবে মারা অধিকার রাখে। একজন রোজাদারকে পুলিশ মারলো আল্লাহ এর বিচার করবেন।
নার্গিস নামে এক নারী বলেন, আজ তারা অনেকে না খেয়ে রোজা রেখেছেন, ইফতার কি দিয়ে করবেন জানেন না। আমরাতো বঙ্গবন্ধুর লোক। আমরা না খেয়ে থাকবো কেন বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সাজ্জাদ নামে অপর একজন বলেন, দুইদিন ধরে না খাওয়া। ক্ষিধের জ্বালা কি সেই বোঝে যে না খেয়ে থাকে। ক্ষিধের কারণে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি। মেম্বার অন্যদের চাল-ডাল দেয় এই নদীপাড়ে কাউকে দেয়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভ প্রশমন করতে ব্যর্থ হলে দুপুর ১টার দিকে খবর পেয়ে সেনা সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ সময় তিনি তালিকা করে ঘরে ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দেবার আশ্বাস দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেন, তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সবার ঘরেই খাবার পৌঁছে দেয়া হবে।
এদিকে স্থানীয় মেম্বার সাজ্জাদুল হক রিপন বলেন, আমার ওয়ার্ডে ৮ হাজার ভোটার। এর বাইরে বিভিন্ন এলাকার লোক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। সবমিলিয়ে ২০ হাজার লোকের বসবাস। সেখানে আমি বরাদ্দ পেয়েছে মাত্র ৭০ ব্যাগ ত্রাণ। এরবাইরে বিভিন্ন জায়গা থেকে সহায়তা এনে দেবার চেষ্টা করছি। কিন্তু তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যে কারণে মানুষ ঘরের বাইরে চলে আসছে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে দ্রুতই তাদের ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।