করোনাভাইরাস: ধান কাটার শ্রমিক সংকট, দিশেহারা যশোরের কৃষকরা - যশোর নিউজ - Jessore News

Breaking

Post Top Ad


Post Top Ad

Responsive Ads Here

Sunday, April 19, 2020

করোনাভাইরাস: ধান কাটার শ্রমিক সংকট, দিশেহারা যশোরের কৃষকরা


করোনাভাইরাসের কারণে যশোরের শার্শা উপজেলায় ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। জনসমাগম হলে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি আবার ঝড় বৃষ্টির আশঙ্কা নিয়েই ইতিমধ্যেই ইরি ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে।

একদিকে ধান কাটার শ্রমিক সংকট, আবার অন্যদিকে ধান কাটার জন্য ব্যবহৃত কাচি পোড়াতে ও মেরামতের জন্য এবং ধার কাটাতে কামারের দোকানও বন্ধ। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

শুক্রবার ইউএনবির এই প্রতিনিধি কয়েকটি মাঠে কৃষকদের সাথে কথা বললে তারা জানান, এ বছরে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুরু হয়ে গেছে ধান কাটা। এক সপ্তাহ পরে পুরোপুরি ধান কাটা শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু শ্রমিক সংকট ও কামারের দোকান বন্ধ করে দেয়ায় সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

কি করে তারা ঘরে ধান উঠাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। কৃষকরা বলছেন, নিজেদের ধান নিজেরা কাটা শুরু করবেন। কিন্তু কামারের দোকান বন্ধ থাকায় ধান কাটার উপকরণের সংকট তৈরি হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন, সারাদেশে করোনাভাইরাসের প্রভাবে ওষুধ ও কাচামালের দোকান খোলার নির্দেশ থাকলেও কৃষির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত কামারের দোকান বন্ধ করে দেয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি।

করোনাভাইরাসজনিত কারণে সৃষ্ট শ্রমিক সংকট ও আগাম বন্যা না হলে সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যেই সব ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে বলে জানান তারা।

শার্শার বেনাপোলের বড় আঁচড়া  গ্রামের কৃষক সোয়েদ আলী জানান, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে কৃষকের মুখে সোনালী ধানে সোনালী হাসির ঝিলিক ফুটবে।

তিনি আরও জানান, উপজেলা কৃষি অফিস এবার ধান রোপণ মৌসুমে তাকে বিনামূল্যে ধানের বীজ, এমওপি ও ডিএপি সার দিয়েছিল। এ সমস্ত বীজ ও সার তার যে জমিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল সে জমিগুলোতে অন্যান্য জমির চেয়ে ভালো ফলন হয়েছে।

কৃষক আসাদ বলেন, দুই বিঘা ধান চাষ করেছেন। জমিতে সময়মতো সেচ, কীটনাশক, অনুকূল আবহাওয়া সব মিলিয়ে তার জমিতে যে ধান হয়েছে, অতীতে কোনো সময়ে এর চেয়ে ভালো ধান আর হয়নি।

তিনি আরও বলেন, চারিদিকে করোনাভাইরাসে সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে, এ সময় ধানের ক্ষেত কিভাবে গোছাবো বুঝতে পারছি না। নেই শ্রমিক তারপরও নিজেরা যে ধান কাটবো তা যন্ত্রপাতি মেরামতের কামারের দোকানও বন্ধ।

‘সরকার কৃষকের দিকে লক্ষ্য না রাখলে কৃষকের জমির ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাবে, এ অবস্থায় কামারের দোকান কিছু সময়ের জন্য খোলার অনুমতি দেয়া খুবই জরুরি,’ বলেন তিনি।

শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার সৌতম কুমার শীল বলেন, উপজেলায় ইরি ধানের জমি ঘুরে দেখেছেন তিনি। কৃষকদের সাথে আলাপ করে তিনি খুবই আনন্দিত হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এবার ইরি ফসল বেশী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

‘তবে করোনার প্রভাব ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে কি পরিমান ফসল পাবো তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। ফলন ভালো হওয়ায় সর্বোচ্চ পরিমান ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছি,’ বলেন তিনি।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূলক কুমার মণ্ডল বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে সরকার ঘোষিত আইন মোতাবেক সব লকডাউন করা হচ্ছে। সব পৌর ও ইউনিয়নে বাজার কমিটিদের সরকারের নির্দেশ মোতাবেক বাজার কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে।

‘যেহেতু আমাদের দেশ কৃষি মাতৃক দেশ, সেক্ষেত্রে কামারের দোকান আংশিক খোলা রাখা যায় কিনা তার জন্য সরকারের কাছে বিশেষ আবেদন করা হবে,’ বলেন তিনি।

Post Top Ad

Responsive Ads Here