যশোরে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন একজন স্বাস্থ্যকর্মী। বর্তমানে তিনি শ্বশুরবাড়ি কেশবপুরের ইমান নগর এলাকায় অবস্থান করছেন।
রোগীর শ্বশুরবাড়ির গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী মুজগুন্নি গ্রাম রোববার সন্ধ্যা থেকে লকডাউন করা হয়েছে।
বর্তমানে লকডাউনে থাকা অবস্থায় তার ফেসবুক ওয়ালে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী। নিজের ফেসবুক ওয়ালে সোমবার তিনি লেখেন, "আলহামদুলিল্লাহ, আমি আল্লার রহমতে অনেকটার সুস্থ। আর আপনারা ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন, সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন। আধাঘণ্টা পর পর সাবান পানি/ হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত মুখ পরিষ্কার রাখুন, মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। সর্বোপরি মহান আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখুন। আর আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।"
এদিকে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ায় যশোরের কেশবপুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে করোনা ইউনিটে নিয়ে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। গত সোমবার সকালে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মেডিক্যাল টিম আক্রান্ত ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও সন্তানের নমুনা সংগ্রহ করে যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে খুলনা পাঠিয়েছে।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারীর (৩৩) করোনা উপসর্গ দেখা দিলে ৮ এপ্রিল তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হয়। এরপর তিনি সেখান থেকে কেশবপুর উপজেলা ইমাননগর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করেন। রবিবার খুলনা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই স্বাস্থ্য সহকারীর নমুনায় করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে জানান।
এ খবরে জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ রায় ইমাননগর গ্রামে উপস্থিত হয়ে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান, মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফীসহ পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ওই বাড়িটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন করা হয়। কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীকে গ্রামে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার খবর প্রকাশিত হলে গোটা কেশবপুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুকুল বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ইমাননগর গ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীকে রেখে চিকিৎসা দেওয়ায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন তিনি।
যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ রায় বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে আপাতত বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে যশোর নিয়ে আসা হবে।’ কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বশুরবাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।’