যশোরে ২৪ ঘণ্টায় ২০০টি করোনা পরীক্ষা সম্ভব - দাবি যবিপ্রবি - যশোর নিউজ - Jessore News

Breaking

Post Top Ad


Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, March 31, 2020

যশোরে ২৪ ঘণ্টায় ২০০টি করোনা পরীক্ষা সম্ভব - দাবি যবিপ্রবি

সারা দেশে যখন করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পরীক্ষার আধুনিক যন্ত্র, উচ্চ মানের গবেষণাগার ও দক্ষ লোকবল সংকটের কথা বলা হচ্ছে, যশোরে তখন ২৪ ঘণ্টায় ২০০টি করোনা পরীক্ষার সক্ষমতার কথা শোনাল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ। যবিপ্রবির জিনোম সেন্টার গবেষণাগারটি করোনা পরীক্ষার মানসম্পন্ন দাবি করে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও দক্ষ লোকবল তাদের রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে পরীক্ষার কিট ও নমুনা সরবরাহ করলেই এক দিনেই শনাক্তের ফলাফল জানানো যাবে।

ইতিমধ্যে যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল গবেষণাগারটি পরিদর্শন করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন। যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সরকারি বিভিন্ন স্থানে গবেষণাগার (ল্যাব) স্থাপনের কাজ করছে। সেখানে গবেষণার জন্য যন্ত্রপাতিও কেনা হচ্ছে। অথচ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে গবেষণার জন্য আগে থেকেই অত্যাধুনিক যন্ত্র ও দক্ষ লোকবল থাকায় সরকার চাইলে এখানে যেকোনো মুহূর্তে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অণুজীব বিজ্ঞানী মো. আনোয়ার হোসেন আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু করোনাভাইরাস নয়, এর চেয়েও ক্রিটিক্যাল (জটিল) ভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য বিশ্বমানের অত্যাধুনিক যন্ত্র ও দক্ষ লোকবল রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে। সরকার চাইলে যেকোনো মুহূর্তে আমাদের ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা যাবে। ২৪ ঘণ্টায় ২০০টি করোনাভাইরাসের নমুনা শনাক্ত করার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। এর জন্য পরীক্ষার প্রয়োজনীয় কিট ও নমুনা সরবরাহ করলেই হবে।’

প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস খুবই বিপজ্জনক একটি ভাইরাস, যা দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে এবং দ্রুত ছড়িয়েও পড়ে। এই ভাইরাস পরীক্ষার জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গবেষণাগার। গবেষণাগারের চার ধরনের নিরাপত্তার মাত্রা বা বায়োসেফটি লেভেল (বিএসএল ১, ২, ৩ ও ৪) রয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) নির্ধারণ করে দিয়েছে। ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা অনুযায়ী বায়োসেফটি লেভেল-৩ ও বায়োসেফটি লেভেল-৪ মাত্রার গবেষণাগার ছাড়া করোনার পরীক্ষা করা নিরাপদ নয়। সঙ্গে প্রয়োজন রিয়েল-টাইম পিসিআর যন্ত্র, যাকে কোয়ান্টিটেটিভ (পরিমাণগত) পিসিআর বা কিউপিসিআর বলা হয়।

দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীব ও জিন গবেষকেরা বায়োসেফটি ১ ও ২ লেভেলের গবেষণাগারে কাজ করেন। কিন্তু এসব গবেষণাগারে করোনা পরীক্ষা করতে গেলে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে যাঁরা সেখানে কাজ করবেন, তাঁরাই আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে যবিপ্রবির উপাচার্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যবিপ্রবির ল্যাবের মান ও পরীক্ষার যন্ত্রের ব্যাপারে। উপাচার্য জানান, তাঁদের জিনোম সেন্টারে একটি রিয়েল-টাইম পিসিআর যন্ত্র রয়েছে, যেখানে ৯৬টি নমুনা একবারে পরীক্ষা করা যায়। ঢাকায় তাঁর ব্যক্তিগত গবেষণাগারে আরেকটি রিয়েল-টাইম পিসিআর যন্ত্র রয়েছে, যেটিতে একবারে ৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। সেটিও এখানে ব্যবহার করা সম্ভব। আর দুটি পিসিআর যন্ত্র রয়েছে, যেগুলো সাধারণ বা কনভেনশনাল।

আর ল্যাবের মান? উপাচার্য আনোয়ার জানান, যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারটি বায়োসেফটি লেভেল-২ মানের, যেখানে জিনোম সিকোয়েন্সের সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা স্মরণ করিয়ে দিতে উপাচার্য দাবি করেন, করোনা পরীক্ষার জন্য লেভেল-২ মানের ল্যাবই যথেষ্ট। শুধু ভাইরাস গ্রো করার জন্য লেভেল ৩ বা ৪ মানের ল্যাব প্রয়োজন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ও যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সম্প্রতি যবিপ্রবির জিনোম সেন্টার পরিদর্শন করেছি। গবেষণাগারটি আমাদের কাছে খুবই ভালো মনে হয়েছে। বিষয়টি আইইডিসিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আইইডিসিআর থেকে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

Post Top Ad

Responsive Ads Here