যশোরে সার কারখানাগুলো ভেজাল সার উৎপন্ন ও মজুদ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে! - যশোর নিউজ - Jessore News

Breaking

Post Top Ad


Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, December 10, 2019

যশোরে সার কারখানাগুলো ভেজাল সার উৎপন্ন ও মজুদ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে!


আসন্ন ইরি ও শীত কালীন সবজির চাষে ভেজাল সার ব্যবহারের জন্য যশোরের একটি সার সিন্ডিকেট তাদের কারখানাগুলোতে রাতের আধারে ভূয়া ও ভেজালযুক্ত সার তৈরী করে মজুত করার ব্যাপক প্রস্তুতি চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বিহীন এ সব গড়ে ওঠা অবৈধ সার কারখানার মালিকেরা প্রায় দেড় যুগ ধরে ভেজাল সার তৈরী পূর্বক প্রতিষ্ঠিত ও নামিদামী কারখানার মোড়ক ব্যবহার করে উত্তরাঞ্চলে পাচার করছে। এর জন্য সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। ক্ষতির মুখে পড়ছে উর্বর জমিগুলো।

অবিলম্বে অবৈধভাবে রাতের আধারে তৈরীকৃত ভেজাল দস্তাসহ অন্যান্য সার জব্দ করতে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যশোরের সর্ব পেশার মানুষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভেজাল সার কারবারী একজন জানান, যশোর শহরের সাহাপুর আড়পাড়ায় সুফলা এগ্রো কেমিক্যালের মালিক শহিদুল ইসলাম জিঙ্ক সালফেড বিভিন্ন ব্রান্ডের হেপটায় ২১% এর স্থলে ৩৬% ব্যবহার করেন। যা বিভিন্ন নামীদামী কোম্পানীর মোড়ক যেমন আমেরিকান, অষ্ট্রেলিয়া, চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের নাম লেখা ব্যবহার করেন। সূত্রগুলো বলেছেন, ৩৬%^ মানের বাংলাদেশে উৎপাদন নেই। এ সব ভেজাল সার কারখানার মালিকদের উৎপাদক ক্ষমতা ২১% থেকে ৩৬% সম্পূর্ন অবৈধ জিঙ্ক সালফেট তৈরী। সূত্রগুলো বলেছেন, সুফলা এগ্রো কেমিক্যাল সার কারখানার মালিক শহিদুল ইসলামের ভাইপো হাসানুল কবির পিকুল সাহাপুরে সুফল এগ্রো কেমিক্যাল নামে একটি অবৈধ সার কারখানা তৈরী করেছেন। তিনি উক্ত ভেজাল সার খানায় জিংকের লাইসেন্স না থাকলেও তিনি তার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন পূর্বের ন্যায়। সম্প্রতি তিনি একটি টাকা পয়সা লেনদেন মামলায় কারাগারে গমন করেন।

সূত্রগুলো বলেছেন, সুফল এগ্রো কেমিক্যাল কারখানায় উৎপন্ন হয় ৫জি কিটনাশক, তৈরী করেন ফুরাডান ৫জি দানা। তাছাড়া, তিনি চাচা হযরতের ফ্যাক্টরীতে বছর কয়েক পূর্বে দস্তা ৫জি তৈরী করেছেন। এর পাশাপাশি নিজের ফ্যাক্টরী প্রস্তুত করে এখন নিজেও সয়ংসম্পূর্ন। সাহাপুরে আরেকজন হোসেন এর গড়ে উঠেছে এএম এগ্রো কেমিক্যাল নামক সার কারখানা। যেখানে সরকারি কোন কাগজপত্র ও অনুমতিপত্র নেই। তার কারখানায় নিন্ম মানের জিংক সালফেট তৈরী করেন। সে তার ভেজাল সার বিক্রির জন্য দেশের নামীদামী সব কোম্পানীর মোড়ক নিজে ছাপিয়ে তার কারখানায় তৈরীকৃত মাটিসহ বিভিন্ন দ্রব্য দিয়ে তৈরী সম্পূর্ণ ভেজাল দস্তা সার বানিয়ে অবাধে বিক্রি করে এখন জিরো থেকে হিরো বনে বনে গেছেন। সূত্রটি আরো জানায়, প্রায় বছর খানেক পূর্বে হোসেনের অবৈধ সার কারখানায় র‌্যাব-৬সহ প্রশাসনের একটি টিম অভিযান চালিয়ে ভেজাল সার জব্দসহ কারখানায় সীল গালা করে দেন। হোসেন, তার স্ত্রীসহ কর্মচারীদের নামে কোতয়ালি মডেল থানায় সার ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় হোসেন, তার স্ত্রী ও কর্মচারীর নামে কোতয়ালি মডেল থানার তৎকালীন এসআই মতিউর রহমান তদন্ত সাপেক্ষে ভেজাল সার তৈরীসহ তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্যতা পেয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

আদালতে মামলা চলা অবস্থায় হোসেনসহ অবৈধ একটি সার সিন্ডিকেট অবাধে এবার ইরি মৌসুম ধরতে ভেজাল দস্তা সারাসহ বিভিন্ন জমি ক্ষতি কারক দ্রব্য সামগ্রী তৈরী করছেন। অপরদিকে হোসেন, পিকুল, শহিদুল ইসলামের ন্যায় সাউদার্ন এগ্রো কেমিক্যাল নামক সার কারখানা হাসান হাবিব সেলিম ওরফে লাইফ নিয়ন্ত্রন করেন। এখানে বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। বৈধ কোন কিছু না থাকলেও জিংক সালফেটসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের মোড়কে ঢুকিয়ে বাজারজাত করেন। এছাড়া, শেখহাটি এলাকায় ঘুরুলিয়ার রাজু আহম্মেদ এ আর এগ্রো কেমিক্যাল নামক একটি সার কারখানা প্রায় দুই যুগ পূর্বে তৈরী করে এখন সে জিরো থেকে হিরো বনে গেছেন। বর্তমানে এই ভেজাল সার প্রস্তুত করে রাজু আহম্মেদ শহরের আর এন রোডে জায়গা কিনে বাড়ি তৈরী করেছেন। ভেজাল সার উৎপন্নর ব্যাপারে সার কারখানার মালিকদের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ফোন করে জানতে চাইলে তারা তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে বলেন এখন আর ব্যবসা করেন না। সূত্রগুলো বলেছেন, অবিলম্বে এ সব সার কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেশের জমির উর্বরা অক্ষুন্ন রাখতে ভেজাল দস্তাসারসহ অন্যান্য উৎপাদনকৃত ভেজাল দ্রব্য জব্দ করতে কৃষকেরা জেলা প্রশাসকসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Post Top Ad

Responsive Ads Here