পেঁয়াজ কান্ড নিয়ে সারা দেশে হুলুস্থূল চলছে। দাম বৃদ্ধি পেতে পেতে ৩০ থেকে ৪০ টাকার পেঁয়াজ আড়াইশ’ টাকা ছুঁয়ে যায়। গত চার দশকে নজিরবিহীন এই দামবৃদ্ধির লাগাম টানতে সরকার দ্রুততার সাথে বিদেশ থেকে বিমানে পেঁয়াজ আমদানি করছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বেশি দামের আশায় যশোরাঞ্চলের কৃষকরা অন্যবারের চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ করছেন।
যশোর সদরের সাতমাইল এলাকার সিরাজুল, সাহেব আলীসহ অনেকে জানান, তাদের এলাকার কৃষকরা সবজি চাষ করেন। কিন্তু এবার অনেকে পেঁয়াজ চাষ করছেন। এই এলাকার শাহাদাত হোসেন গতবার পাঁচ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছিলেন। এবার সেখানে তিনি ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। চুড়ামনকাটি এলাকার চিত্রও একই। সেখানকার মাঠে অনেক চাষি এবার পেঁয়াজ চাষ করেছেন। কেউ কেউ দুই একদিনের মধ্যেই চাষের কাজ শেষ করবেন।
চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, পোলতাডাঙ্গা গ্রামের রফিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান ও রবিউল ইসলাম এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। এছাড়া আব্দুলপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন, আজিজুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম চাষের জন্য পাতো ফেলেছেন। আর বাগডাঙ্গা গ্রামের মহব্বত আলী, মগহাটি গ্রামের মহিউদ্দিনসহ অসংখ্য চাষি পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন বাজারে পেঁয়াজের দাম ভাল থাকায়। তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে পেঁয়াজ চাষ করেন এজন্য আমরা উদ্বুদ্ধ করছি।
একই চিত্র যশোর সদরের চাঁচড়া ইউনিয়নে। এখানকার মাহিদিয়া গ্রামের আছির আলী গত মৌসুমে চার কাঠা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেন। এবার বাড়িয়ে আট কাঠা জমিতে চাষ করছেন। চাষিদের ভাষ্য, হঠাৎ দাম বৃদ্ধিতে তারা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপপরিচালক ইমদাদ হোসেন শেখ বলেন, ‘যশোর জেলায় এবার এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে চারা রোপণ মৌসুম শুরু হয়েছে। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এখনো এক মাস পেঁয়াজ রোপণের সময় রয়েছে। দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন কৃষকরা।
তবে বেশি চাষ হলে তখন ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়েও শঙ্খায় রয়েছেন অনেক চাষি। তবে চাষিদের এই আশঙ্কার মধ্যে মঙ্গলবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দিন বলেছেন, পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণে সরকার প্রকল্প হাতে নিচ্ছে।