যশোরে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড়-পাটালি তৈরির শপথ নিয়েছেন গাছিরা। যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ গাছিদের ভেজালমুক্ত গুড়-পাটালি তৈরির শপথ বাক্য পাঠ করান।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) মিলনায়তনে গাছি সমাবেশে ৬০ জন গাছি এ শপথ নেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, যশোরের বিখ্যাত খেজুরের গুড়-পাটালির সারা দেশে সুনাম রয়েছে। সেই সুযোগে আপনাদের মধ্যে অনেকে অধিক লাভের আশায় পাটালিতে চিনিসহ বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে ভেজাল করেন। খেজুর গুড় তৈরির মৌসুম শুরু হয়েছে। ভেজালের অভিযোগ পেলেই এবার অভিযান চালানো হবে। ভেজালের সত্যতা পেলে যে টাকা জরিমানা করা হবে, তাতে লাভ-আসল দুটোই যাবে। সুতরাং আপনারা যশোরের ঐতিহ্যবাহী এই গুড়-পাটালিতে কোনো ধরনের ভেজাল করবেন না।
এ সময় জেলা প্রশাসকের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে উপস্থিত গাছিরা দুই হাত তুলে ভেজালমুক্ত খেজুরের গুড়-পাটালি উৎপাদনের শপথ নেন।
অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া গাছি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খেজুরের গুড়-পাটালি উৎপাদন খুব পরিশ্রমের কাজ। সেই তুলনায় আমরা ন্যায্য দাম পাই না। তবে গত বছর থেকে ‘কেনারহাট ডটকম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছ থেকে বেশি দামে গুড়-পাটালি কেনা শুরু করেছে। যে কারণে আমরা গত বছর থেকে একটু বেশি দাম পাচ্ছি। ন্যায্য দাম না পেয়ে আগে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ভেজাল করতো। কিন্তু বেশি দাম পাওয়ার কারণে এখন আর ভেজাল মেশানো হয় না। আমরা খাঁটি গুড়-পাটালি তৈরি করি।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, খেজুরের গাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। যে কারণে গুড়-পাটালি উৎপাদনও প্রতি বছর কমছে। ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ বাঁচিয়ে রাখার জন্যে বাঘারপাড়া উপজেলায় এক হাজার খেজুর গাছ সম্বলিত একটি পরিকল্পিত আদর্শ খেজুর গাছের বাগান সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই বাগানকে কেন্দ্র ‘খেজুর গুড়-পাটালির শিল্পাঞ্চল’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য উদ্যোক্তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- কেনারহাটের উদ্যোক্তাদের একজন তরিকুল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু সুফিয়ান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের একসপ বিভাগের হেড অব টেকনোলজি মো. সোহেল রানা, দরাজহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আয়ুব হোসেন প্রমুখ।