যশোরে নতুন করে সাড়ে ৬ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। মূলত যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ও মেডিক্য্লা কলেজ হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চালু রাখতে ওজোপাডিকো এ পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডে ৩৩ কেভির এ পাওয়ার স্টেশনের নির্মাণ কাজ শেষের পথে।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড যশোর অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত দিনে চাঁচড়া বাবলাতলা পাওয়ার স্টেশন থেকেই শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বিভিন্ন এলাকার ট্রান্সফরমার (ফিডার) বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু শহরে লোড বৃদ্ধির কারণে চাঁচড়া পাওয়ার স্টেশনটি হিমশিম খাচ্ছে ও ভোল্টেজ ওঠানামা করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওজোপাডিকো শহরে আরো একটি পাওয়ার স্টেশন স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কারাগার ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে গুরুত্ব দিয়ে শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের সামনের পাওয়ার স্টেশনটি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের প্রথম দিকে শুরু হয়। শেষ হবে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী এবং ওজোপাডিকোর চেয়ারম্যান আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ার স্টেশনটির উদ্বোধন করবেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের ২০ এমবিএ পাওয়ার স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে চলছে ৩৩ কেভির ৩টি হাই ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তার টানার কাজ। এটি শহরের সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্থাপন করা হচ্ছে। চাঁচড়া পাওয়ার স্টেশন থেকে শুরু করে রেল রোড হয়ে ঘোপ জেল রোড দিয়ে বেলতলা ঘুরে সেন্ট্রাল রোড পাওয়ার স্টেশনে গিয়ে হাই ভোল্টেজের এ লাইন শেষ হবে। সাড়ে ৬ কিলোমিটার এ লাইনে বসেছে দুই শতাধিক সিমেন্টের পিলার। এরআগে যশোর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় সড়কের একপাশে বৈদ্যুতিক লাইন ছিল। এবারের প্রকল্পের নতুন সাড়ে ৬ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন সড়কের অপর প্রান্ত থেকে টানা হচ্ছে। এটি হাসপাতাল ফিডার হয়ে নিউটাউন ফিডার ও বড়বাজারে যুক্ত হবে। এরপরও পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলে পরবর্তীতে এটি শেখহাটি ফিডারে যুক্ত হবে। নতুন ২০ এমবিএ পাওয়ার স্টেশনটি চালু হবার পর শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় সংকট কেটে যাবে। বড় ধরনের বিপর্যয় ছাড়া শহরের ঘোপ ও বড় বাজার এলাকায় বিদ্যুৎ যাবে না বলে ওজোপাডিকো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এই পাওয়ার স্টেশনটি চালু হবার পর পর্যায়ক্রমে খোলাডাঙ্গা, ঝুমঝুমপুর ও সেনানিবাস এলাকায় আরো ৩টি পাওয়ার স্টেশন নির্মাণ করা হবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে। এ বিষয়ে কথা হয় নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আতিয়ার রহমানের সাথে। তিনি বলেন, চাঁচড়া পাওয়ার স্টেশন গ্রিড থেকে রেলরোড হয়ে টানা সাড়ে ৬ কিলোমিটার নতুন বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজ তার টানার কাজ চলছে। এ কাজ বর্তমানে শেষের পথে। এছাড়া, ঘোপ সেন্ট্রাল রোড়ের পাওয়ার স্টেশন ও ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধুমাত্র ঘষামাজার কাজ বাকি রয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ এ পাওয়ার স্টেশনের উদ্বোধন হবে। নতুন এ পাওয়ার স্টেশন নিয়ে যশোর ওজোপাডিকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহিদুল আলম বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাস নাগাদ এ পাওয়ার স্টেশনটি চালু হবার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি চালু হবার পর সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিদ্যুৎ সংকট থাকবে না ও ভেল্টেজের ওঠানামা বন্ধ হবে। যশোরে ব্যাপকভাবে বিদ্যুতের লোড বৃদ্ধির কারণে নতুন পাওয়ার স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মূলত কেন্দ্রীয় কারাগার ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে এ প্রকল্পে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।