বিদেশ থেকে ফেরার ১০ ঘণ্টা পর যশোরের বেনাপোলে শ্বশুরবাড়িতে খুন হয়েছেন জামাল হোসেন নামে এক প্রবাসী। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী, শ্বশুর ও শাশুড়ি আটক হয়েছে।
পুলিশ ও জামালের স্বজনদের ধারণা, স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় জামালকে তার স্ত্রী, শ্বশুর ও শাশুড়ির সহযোগিতায় ভাড়াটে লোক দিয়ে খুন করা হয়েছে। জামাল হোসেন (৩৫) বেনাপোল পোর্ট থানার ধান্য খোলা গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে। গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে তিনি খুন হন।
গতকাল সকালে পুলিশ তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আটককৃতরা হলেন-জামালের স্ত্রী আয়েশা খাতুন, শ্বশুর রিয়াজুল ইসলাম টুকু ও শাশুড়ি ফুলবুড়ি। জামালের ভাই রাশেদুজ্জামান জানান, ১০ বছর আগে জামালের সঙ্গে প্রতিবেশী আয়েশার বিয়ে হয়।
সংসারে সচ্ছলতা আনতে জামাল মালয়েশিয়া যান। সেখান থেকে টাকা পাঠাতেন শ্বশুরবাড়িতে। এর মধ্যে তিনি তিনবার দেশে আসেন। স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়। তার পরও জামাল তাকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। গত মঙ্গলবার বিকালে জামাল মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। গ্রামের বাড়ি এসে রাতেই উপহার সামগ্রী নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ি।
রাত ২টার দিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন চিৎকার করে জানান, রোহিঙ্গারা জামালকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে। স্বজনরা ওই বাড়িতে গিয়ে ঘরের সিঁড়িতে জামালের রক্তাক্ত লাশ পান। তাদের ধারণা, স্ত্রী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে পেশাদার খুনিদের দিয়ে জামালকে খুন করিয়েছে। পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে হত্যার আলামত দেখে ওই তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
এ ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনজুয়ারা জানান, এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। যেদিন জামাল বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরল, সেদিন তাকে হত্যা করল। এটা দুঃখজনক। উল্লেখ্য, এর আগেও একবার জামালকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তখনো অভিযোগ ওঠে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে।