মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর - যশোর নিউজ - Jessore News

Breaking

Post Top Ad


Post Top Ad

Responsive Ads Here

Monday, May 27, 2019

মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর

মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে অর্ধশতাব্দী ধরে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার সমন্বয়ে গঠিত দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর। কালের আবর্তনে প্রতিষ্ঠানটি রূপ নিয়েছে অগণিত শাখা-প্রশাখা বেষ্টিত এক মহিরুহে। শিক্ষক কাঠামোতে এসেছে অচিন্তনীয় পরির্বতন। আধুনিকায়নের ছোঁয়া লেগেছে অবকাঠামো ও পাঠদানে। সকল শ্রেণিকক্ষ বর্তমানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে রূপান্তর লাভ করেছে।
সম্পূর্ণ সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত এই কলেজটি শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী যাতে এইচএসসি পরবর্তী সঠিক নির্দেশনা গ্রহণপূর্বক বুয়েট, মেডিকেল ও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে তার জন্যেও এখানে রয়েছে বিভিন্ন দিকনির্দেশনার ব্যবস্থা। সরকারের গৃহীত সীদ্ধান্তের আলোকে কলেজে প্রাইভেট কোচিং সম্পূর্ণ বন্ধ। একজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে গরিব, মেধাবী, বিত্তবান, দুর্বল-সবল সকল স্তরের ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত আগ্রহ ও স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে এখানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে শিক্ষা লাভ করে।
কলেজে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে আর্থিক কোনও সম্পর্ক শক্তভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। এছাড়া কোনও স্যারের বাসা বা ক্যাম্পাসের বাইরে অন্য কোনও স্থানে পাঠদান নিষিদ্ধ। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে এক্সট্রা ক্লাসের ব্যবস্থা। অতিরিক্ত ক্লাসে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো ছাড়াও ইংরেজি, আইসিটি, অর্থনীতি ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এতে ছাত্রছাত্রী কিংবা অভিভাবকদের বিষয়ভিত্তিক অতিরিক্ত ফিস দিতে হয় না। এ কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ অব্যাহতভাবে এ কলেজের শিক্ষার মান, পরিবেশ ও পাশের হার দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় ঈর্ষনীয়। কলেজে রয়েছে বিজ্ঞান ক্লাব, আইসিটি ক্লাব, ইংলিশ ক্লাব, সাংস্কৃতিক ক্লাবসহ ছেলেমেয়েদের শারীরিক সুস্থ্যতার জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোরে এবছরের ডিসেম্বর মাসে উদযাপিত হতে যাচ্ছে কলেজটির পঞ্চাশতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া কলজেটি জন্মলগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীর অভাবনীয় ফলাফল নিশ্চিত করার পাশাপাশি উপহার দিয়েছে অগণিত মেধাবী মুখ যারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে আছে এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করছে। উচ্চ শিক্ষিত এবং দক্ষ শিক্ষকম-লী, যারা সর্বদা নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সন্তানস্নেহে আগলে তৈরি করে চলছেন তাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের। পাঠদানকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে গাইড টিচার ও ক্লাস টিচারের সার্বিক নজরদারিতে নিশ্চিত করা হচ্ছে শিক্ষার্থীর পড়াশোনা।
যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে এক হাজার ছয়শ ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করে। অনার্স ও মাস্টার্সসহ প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী এ কলেজে অধ্যয়নরত। কলেজটি এ পর্যন্ত কয়েক বার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ট্রফি ও জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০০২, ২০০৩ ও ২০০৪ সালে সেনাবাহিনী প্রধান ট্রফি ও ২০০২ সালে রাষ্ট্রপতি ট্রফি অর্জন করে। খেলাধুলায়ও কলেজটি পিছিয়ে নেই। তারা ২০১৬ সালে বিজয় দিবস টি-২০ কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
ইতিমধ্যে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। ছাত্রছাত্রীর মাঝে এই কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এর অন্যতম কারণ এখানে প্রতি বিষয়ে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষিাদানের অসুস্থ প্রতিযোগিতা নেই। নেই কোনও ধরনের রাজনীতি অথবা সিনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনও ধরনের নির্যাতনের আশঙ্কা। শুধু তাই নয়, দূরবর্তী শক্ষার্থীরা যে মেসগুলোতে থাকে সেখানেও শিক্ষকমণ্ডলী নিয়মিত পরির্দশন করে থাকেন। কারণ শিক্ষার্থীর মেধার উন্নয়ন এবং ভালো ফলাফল নিশ্চিতকরণে কলেজটির সকল শিক্ষক এবং কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারাবদ্ধ।

লেখক : প্রসেনজিৎ বোস :
প্রভাষক, ইংরেজি বিভাগ, ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর

Post Top Ad

Responsive Ads Here