প্রায় দুই বছর আগে যশোর জেলা ছাত্রলীগ দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। দুই নেতা নির্ভরতায় চলেছে সংগঠনের কার্যক্রম। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে ব্যর্থ হন। সংগঠনের নীতি আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় সাধারণ সম্পাদককে স্থায়ী বহিষ্কার ও কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফলে নেতৃত্বশূন্যতায় ভুগছে যশোর জেলা ছাত্রলীগ। নতুন কমিটি কবে নাগাদ হবে, সেটিও নিশ্চিত নয় কেউ। সংগঠনকে গতিশীল করতে অবিলম্বে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই যশোর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সময় অভিযোগ তোলা হয় সভাপতি প্রার্থী রওশন ইকবালী শাহী বিবাহিত।
এ বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, তদন্ত হয়। কিন্তু সেই যাত্রায় তিনি পার পেয়ে যান। সম্মেলনের এক সপ্তাহ পর রওশন ইকবাল শাহীকে সভাপতি ও ছালছাবিল আহমেদ জিসানকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
নেতারা জানান, দুই বছর দায়িত্ব পালন করলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। ফলে ওই দুই নেতার নেতৃত্বে চলতে থাকে সংগঠনের কার্যক্রম। দুই নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। তবে সেটি খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি কেন্দ্র।
সর্বশেষ ১৪ মার্চ শহরের পুরাতন কসবা এলাকায় চাঁদার দাবিতে নয়ন চৌধুরী সাজু নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ হত্যামামলার প্রধান আসামি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল ইসলাম জিসান। হত্যাকাণ্ডে জেলা ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতায় সংগঠনের ভাবমূর্তি চরম সংকটে পড়ে। বিষয়টি আমলে নিয়ে গত ১৯ মার্চ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
ছাত্রলীগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছালছাবিল আহমেদ জিসানের বিরুদ্ধে সংগঠনের নীতি আদর্শ পরিপন্থী নৈতিক স্খলনজনিত গুরুতর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ জন্য তাকে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো। সেই সঙ্গে যশোর জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত তরুণ বলেন, জেলা ছাত্রলীগ এখন অভিভাবকশূন্য। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে অবিলম্বে নতুন কমিটি দেওয়া হোক। ক্লিন ইমেজের সাংগঠনিক নেতাকে জেলা কমিটির নেতৃত্বে দেখতে চাই।
ঝিকরগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এহসানুল হাবীব শিপলু বলেন, জেলা কমিটি বিলুপ্ত করায় এখন নেতৃত্বশূন্য। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে অবিলম্বে নিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হোক। নিবেদিত ও যোগ্য নেতাদের মূল্যায়ন করলে সংগঠন এগিয়ে যাবে।
নিউজ সূত্র ঃ খোলা কাগজ