যশোরে বিদেশী নন্দিনী ফুলের চাষ শুরু - যশোর নিউজ - Jessore News

Breaking

Post Top Ad


Post Top Ad

Responsive Ads Here

Tuesday, November 22, 2016

যশোরে বিদেশী নন্দিনী ফুলের চাষ শুরু

বিশ্বের মধ্যে জাপান, হল্যান্ড, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, চীন, নেপাল ও ভুটানের পর ফুলের রাজ্য হিসাবে খ্যাত যশোরের গদখালী, বেনেয়ালি ও শার্শায় বাণিজ্যিকভাবে ‘নন্দিনী’ ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। বিদেশে‘এস্টোমা’ বা ‘অলোকা’ হিসেবে পরিচিতি থাকলেও স্থানীয়দের কাছে এই ফুল‘নন্দিনী’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। বাড়ছে নতুন এ ফুল চাষ। বেশী লাভের আশায় বুক বাধছেন চাষীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো টেকনোলজির গবেষকরা টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উদ্ভিদের অনুচারা উৎপাদনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘এগ্রোব্যাক’ বাংলাদেশে উচ্ছমুল্যের সম্পূর্ণ নতুন জাতের এই ‘অলোকা’ ফুল নিয়ে এসেছেন। বিনামূলে নতুন ্এই ফুলের চারা সরবরাহ করছেন কৃষকের মাঝে। ৩টি ফুলের মূল্য ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হবে বলে জানান চাষীরা।
চাষী ও ফুল ব্যাবসায়ি জামাল হোসেন বলেন-ধান পাট সরিষা আখ চাষ করে প্রতিবছর লসের মুখ দেখতেন তারা। ফলে ৭বছর ধরে ফুলের চাষ করে সংসার চলছে ভাল। নতুন নন্দিনী ফুলের লাভের আশা করছেন তারা।
চাষী নুরমোহাম্মদন বলেন-অন্য ফসলে লস গুনতে হতো তাদের। ফুল চাল লাভবান চাষ। ফলে নতুন ফুল চাষ বাড়ছে এলাকায়। তিনি এবার ১৬৬টি নন্দনী ফুলের গাছ লাগিছেন। দাম ভাল পেলে আগামীতে ৫বিঘা জমিতে এ ফুলের চাষ করার ইচ্ছা ব্যাক্ত করেন তিনি।
নন্দিনীর ইংরেজি নাম‘লিসিয়ানথাস’।এর বৈজ্ঞানিক নাম‘এস্টোমা গ্রান্ডি ফ্লোরাম। গ্রান্ডিফোরাম জাপানি ভাষায় ‘তরুকোগিকিও’ এবং আমেরিকায় ‘আমেরিকান গোলাপ নামে পরিচিত। জেনেটিনসিয়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত বর্ষজীবী গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ এটি। এটি মূলকান্ড এবং পাতায় বিভক্ত, পাতার রং নীলাভ সবুজ রঙের। নন্দিনী ফুলগাছ ২০থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। দেখতে অনেকটা জারবেরা আর গোলাপের মাঝামাঝি।এই ফুল ৪৫টি রঙে দেখা যায়।একটি গাছে কমপক্ষে ৮০থেকে ১২০টি ফুল ফোটে। এ ফুলের উৎপত্তিস্থল যুক্তরাষ্ট্রে হলেও ফুলের চাষ নিয়ে গবেষণা হয়েছে জাপানে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ফুলের জনপ্রিয়তা ও বাণিজ্যিক উৎপাদন দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন,পানিসারা গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও নীলকন্দনগর গ্রামের সাইফুল ইসলাম গতবছর পরীক্ষামুলক ভাবে নতুন এই জাতের ফুলের চাষ করেন। ইতোমধ্যে ২৪জন চাষি নন্দিনী ফুলের চাষ শুরু করেছেন।এর ফলে বাংলাদেশে বিদেশি এই ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়েছে। হল্যান্ড থেকে আমদানি করা এই ফুলের প্রতিটি স্টিক ঢাকার বাজারে এক’শ/ দেড়’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।   
প্রতিটি গাছে একক ও দ্বৈত রঙে ৮০টির অধিক ফুল দেখা যায়।এই ফুল গাছ থেকে তোলার পর ২০ দিন এবংফোটা অবস্থায় ৩৫ থেকে ৪০ দিন সতেজ থাকে। একটি চারা লাগানোর ৯০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়।তাই বিদেশি নতুন এই ফুলের চাষ করে তারা।
ফুলচাষী কামাল হোসেন বলেন-ব্যাপক লাভবান হবেন এমনটি আশা ফুলচাষিদের। বেলে-দোআঁশ এবং জৈব পদার্থযুক্ত মাটি এই ফুল চাষের জন্য উপযুক্ত। নন্দিনী ফুলের গাছ অনেক বেশি সহনশীল। ঝড়-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগেও গাছ নষ্ট হয় না। সারা বছরই এই ফুল চাষ করা যায়।  
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা-হীরক কুমার সরকার বলেন, উপজেলায় চলতি মৌসুমে১০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ হয়েছে। এলাকায় বাড়ছে ফুলের চাষ। নতুন নন্দিনি ফুল চাষে কৃষকের উৎসাহ যোগাচ্ছেন কৃষি বিভাগ। উপযোগি আবহাওয়া সহ উর্বর জমিতে ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
বেনাপোল প্রতিনিধিঃ 

Post Top Ad

Responsive Ads Here